Monday, April 11, 2016



হোমিওপ্যাথি (Homeopathy also homœopathy or homoeopathy; from the Greek ὅμοιος, hómoios, "similar" + πάθος, páthos, "suffering" or "disease") জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান উদ্ভাবিত (১৭৯৬) এক চিকিৎসা পদ্ধতি এই চিকিত্সা পদ্ধতির অন্তর্নিহিত মূলনীতি হচ্ছে- কোনো একজন সুস্থ্ ব্যক্তির উপর যে ওষুধ প্রয়োগ করলে তার মধ্যে অসুখের লক্ষণ দেখা দেয়, ওই একই ওষুধ সেই অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির উপরে প্রয়োগ করলে তা অসুস্থ্ ব্যক্তির জন্য অসুখের লক্ষণ নিরাময়ের কাজ করেহ্যানিম্যানের প্রস্তাবিত এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা


কিন্তু বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে যে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগের ফলে কোনপ্রকার শারীরিক পরিবর্তন হয় না, যদিও কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ গ্রহনের কারণে হয়ত রোগী মানসিক প্রশান্তি লাভ করে থাকতে পারেন এইজন্য হোমিওপ্যাথিক ওষুধকে "প্লেসবো" হিসেবে গণ্য করা হয় এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা পদ্ধতিকে বিজ্ঞানীরা ছদ্মবিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করে থাকেন


হ্যানিম্যান বিশ্বাস করতেন সকল অসুখের মূলে রয়েছে "মিয়াসম" নামক একধরনের প্রতিক্রিয়া এবং হোমিওপ্যাথিক ওষুধ এই মিয়াসম দূর করার জন্য কার্যকর। সাধারণত হোমিওপ্যাথিক ওষুধ তৈরী করার জন্য একটি নির্দিষ্ট দ্রব্যকে ক্রমাগত লঘুকরণ করা হয় অ্যালকোহল অথবা পতিত জলে দ্রবীভূত করে। এই লঘুকরণ এতবার করা হয়ে থাকে যে শেষপর্যন্ত এই মিশ্রণে প্রাথমিক দ্রব্যের অনু পরিমানও অবশিষ্ট থাকে না
আধুনিক চিকিত্সাবিজ্ঞানে এবং বৈজ্ঞানিক মহলে হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা পদ্ধতিকে অবৈজ্ঞানিক, আজগুবি আর হাতুড়ে চিকিত্সা হিসেবে গন্য করা হয়। রোগী চিকিত্সায় এর প্রয়োগের নীতিহীনতা বিজ্ঞানীরা সমালোচনা করে থাকেন এবং অনেকেই একে প্রতারণার সামিল মনে করেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিত্সার মূলনীতিকে অনেক আগেই বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল প্রমানিত করা হয়েছে এবং এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও খুঁজে পাওয়া যায়নি যদিও কিছু কিছু গবেষণায় এর কার্যকারিতার সপক্ষে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে,পরবর্তিতে কঠোর বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনার মাধ্যমে সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয়েছে যে হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতির সপক্ষের এই কতিপয় ফলাফলের পিছনে ছিল ত্রুটিপূর্ণ গবেষণা পদ্ধতি এবং কিছু গবেষকের পক্ষপাতদুষ্ট ফলাফল উপস্থাপনহোমিওপ্যাথিক চিকিত্সা পদ্ধতির প্রস্তাবিত মূলনীতি যে শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিকভাবে অযুক্তিসংগত তাই নয়, উপরন্তু এই তত্ত্ব মৌলিক বৈজ্ঞানিক নীতির পরিপন্থী


ইতিহাস



ভারত বাংলাদেশে বহুকাল থেকেই এই চিকিৎসা চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভিজ্জ বা সাধারণ রাসায়নিক পদার্থ থেকে কনসেনট্রেট হিসেবে এই ওষুধ তৈরি করা হয় এবং চিকিৎসকরা গাইড বুকের নির্দেশ অনুযায়ী সেগুলি প্রয়োজন মতো লঘুকৃত করেন বাংলা ভাষায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রচুর বইপত্র আছে এবং এগুলির ভিত্তিতে দেশে এই চিকিৎসা চলছে ইদানিং দেশের নগর শহরে আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদানের জন্য কয়েকটি হোমিওপ্যাথি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে



বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০০৯ সালে একটি বিবৃতিতে জানায় যে হোমিওপ্যাথি কোনো বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা নয়


প্রমাণ এবং ফলপ্রসূতা

অনুভূত প্রভাব ব্যাখ্যা



অকার্যকর হওয়া সত্ত্বেও হোমিওপ্যাথি কিভাবে রোগ নিরাময় করতে পারে কিংবা লক্ষ্মণ উপশম করতে পারে, তার কারণ হিসেবে বিজ্ঞান যা বলে



  •      প্লেসবো প্রভাব
  •     আলোচনা এর চিকিৎসাগত প্রভাব
  •   প্রাকৃতিক নিরাময়
  •   অস্বীকৃত চিকিৎসা
  •   নন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎস

সমালোচনা



ক্লিনিকাল ভিত্তিতে যে সকল রোগী সাধারণ চিকিৎসার বদলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নির্বাচন করেছেন, তাদের সময়মত রোগ নির্ণয় এবং ফলপ্রসূ চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় নি, ফলে অবস্থা আরও গুরুতর হয়েছে হোমিওপ্যাথির সমালোচকেরা বলেছেন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণকারী ব্যক্তিরা যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারেন নি,যা প্রচলিত চিকিৎসায় সম্ভব ছিল, এবং এর ফলে মৃত্যুও হয়েছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দাবি করেন, প্রচলিত চিকিৎসা রোগকে আরও গুরুতর করবে এবং আরও ভয়াবহ সমস্যার মুখোমুখি করবে  কিছু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তাদের রোগীকে উপদেশ দেন ভ্যাক্সিনের পরিবর্তে হোমিওপ্যাথিক nosode ব্যবহার করতে .,যা জৈবিক উপাদান যেমন পুঁজ, রোগাক্রান্ত টিস্যু থেকে তৈরি হয় যখন হানিম্যান এই পদ্ধতির বিরোধী ছিলেন, কিছু আধুনিক হোমিওপ্যাথিক এটি প্রায়শ ব্যবহার করে থাকেন যদিও এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেইএও জানা যায়,হোমিওপ্যাথরা অ্যান্টি - ম্যালেরিয়াল ওষুধ ব্যবহার করতে নিষেধ করে এই নিষেধবাণী যারা আক্রান্ত,তাদের বিপদে ফেলেছে, যেহেতু ম্যালেরিয়া পরজীবির বিরুদ্ধে হোমিওপ্যাথইক ওষুধ একদম অকার্যকর

১৯৭৮ সালে অ্যান্থনি ক্যাম্পবেল , রয়্যাল লন্ডন হোমিওপ্যাথিক হাসপাতালের একজন কনসাল্ট্যান্ট , জর্জ ভিথলকাস এর বিবৃতির কঠোর সমালোচনা করেন, যিনি তার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকে চালু করতে চেয়েছিলেন ভিথলকাস বলেছেন, অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সিফিলিস রোগের চিকিৎসা করলে তা পরবর্তীতে সেকান্ডারি এবং টারশিয়ারি অবস্থায় উন্নীত হতে পারে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র সহ ক্যাম্পবেল একে দায়িত্বহীন বিবৃতি বলে আখ্যা করে বলেন, কথা একজন সচেতনতা বিহীন মানুষকে প্রচলিত ওষুধ গ্রহণে নিবৃত্ত করবে



আমেরিকান জার্নাল অফ মেডিসিন Should We Maintain in Open Mind about Homeopathy শীর্ষক একটি আর্টিকেলে প্রকাশিত , মাইকেল বম এবং এডয়ার্ড আর্ন্সট বলেছেন, "হোমিওপ্যাথি বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা চিকিৎসা পদ্ধতির সবচেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ এই যুক্তি বহির্ভূত শুধু বৈজ্ঞানিক মতবাদের সাথে মিলে না, তাই নয়, বরং এটি স্ববিরোধীও বটে যদি হোমিওপ্যাথি সঠিক হয়, তবে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ফার্মাকোলজির অধিকাংশই বেঠিক



২০১৩ সালে স্যার মার্ক ওয়ালপোর্ট , যুক্তরাজ্যের সরকারী প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হোমিওপ্যাথি সম্বন্ধে বলেন,' বৈজ্ঞানিক ভাবে আমার দৃষ্টিভঙ্গি একদম সুস্পষ্ট; হোমিওপ্যাথি একটি ননসেন্স, অবৈজ্ঞানিক শাখা সরকারের কাছে আমার উপদেশ, হোমিওপ্যাথিতে কোন বিজ্ঞান নেই এটির সর্বোচ্চ প্লেসবো এফেক্ট থাকতে পারে এটি এখন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তারা এর পিছনে খরচ করবে কি নাতার পূর্বসূরি প্রফেসর জন বেডিংটন বলেছেন, ' আমি হোমিওপ্যাথির ব্যাপারে যা ভাবতে পারি, তা হল পাগলামি এটির কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই আসলে, সকল বৈজ্ঞানিক যুক্তি বলে এটি কোন যুক্তিযুক্ত জ্ঞান নয় কিন্তু হোমিওপ্যাথি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে



তথ্যসূত্র -উইকিপিডিয়া

0 comments:

Post a Comment

Healthymoy. Powered by Blogger.

''Good Health Good Life''


অতি প্রয়োজনীয়

Popular Posts

Blog Archive