Monday, April 11, 2016



ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা অত্যন্ত গুণী একটি ভেষজ উদ্ভিদ ঔষধি এই ভেষজের নানা গুণের কথা পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষের জানা শরীরে নানা প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিতে আর অসুখ-বিসুখ সারিয়ে তুলতে অ্যালোভেরা অতুলনীয় এই উদ্ভিদ খাদ্য-পানীয় হিসেবে যেমন কার্যকর তেমনি তা বাহ্যিকভাবেও ব্যবহারযোগ্য অ্যালোভেরার রস পান করে, সালাদ হিসেবে খেয়ে এবং ত্বক চুলে ব্যবহার করে আপনিও দারুণ উপকৃত হতে পারেন


আসুন জেনে নেই ঘৃতকুমারীর টি অনন্য উপকারিতা
১। ভিটামিন খনিজ
অ্যালোভেরা নানা ধরনের ভিটামিন খনিজের এক সমৃদ্ধ উৎস। ভিটামিন-,সি,, ফলিক অ্যাসিড, কোলিন, বি-, বি-, বি- (নিয়াসিন) ভিটামিন বি- এর দারুণ উৎস এটা। প্রায় ২০ ধরনের খনিজ আছে ঘৃতকুমারীতে। এর মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার ম্যাংগানিজ
২। দূষণ মুক্তি
অ্যালোভেরার আঠালো রস পানের একটা দারুণ ব্যাপার হলো খাদ্যনালীর ভেতর দিয়ে দেহের ভেতরে প্রবেশের সময় থেকেই পুরো পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার করতে করতে যায়। এই রস দেহের অভ্যন্তরীণ নানা টক্সিন বা দূষিত উপাদান শুষে নিয়ে মলাশয় দিয়ে বের হয়ে যায়

৩। অ্যামাইনো ফ্যাটি অ্যাসিড
মানব দেহের নানা প্রয়োজনীয় প্রোটিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অ্যামাইনো অ্যাসিড। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ৮টি অত্যাবশ্যক অ্যামাইনো এসিড আছে অ্যালোভেরায়। আর এতে মোট অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে ১৮ থেকে ২০ ধরনের। ছাড়া নানা ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিডেরও দারুণ উৎস এই ঘৃতকুমারী
৪। ওজন কমাতে সহায়ক
খাবার-দাবার হজমে সহায়তা এবং শরীরকে দূষণমুক্ত করার মধ্য দিয়ে ঘৃতকুমারী আপনার স্বাস্থ্যের যে প্রাথমিক উন্নতি ঘটায় তার অবধারিত ফল হলো ওজন ঠিকঠাক থাকা। এমনিতে ওজন কমানো নিয়ে অনেক সমস্যায় থাকলেও নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান করলে আপনার ওজনের সমস্যা অনেক কমে আসবে
৫। ত্বক চুলের মহৌষধ
আধুনিক প্রসাধনী সামগ্রীর অন্যতম কাঁচামাল এই অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী। ত্বকের নানা ক্ষত সারিয়ে তুলতে কার্যকরী। রোদে পোড়া, ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া পোকার কামড়ের মতো বাহ্যিক সমস্যাগুলো সারিয়ে তুলতে পারে সহায়ক এটা। এমন বাহ্যিক ক্ষতে ঘৃতকুমারীর রস মাখলেও ব্যথার উপশম হবে, কেননা বেদনানাশক হিসেবেও এটা অতুলনীয়। চুল পরিষ্কার করতে, চুলে পুষ্টি জোগাতে এবং চুল ঝলমলে উজ্জ্বল রাখতে ঘৃতকুমারীর রসের জুড়ি নেই
৬। চাপ রোগ প্রতিরোধ
ঘৃতকুমারী দারুণ অ্যাডাপ্টোজেন। শরীরের প্রাকৃতিক ক্ষমতাকে বাড়িয়ে বাহ্যিক নানা চাপ রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালনকারী উপাদানকে অ্যাডাপ্টোজেন বলা হয়ে থাকে। ঘৃতকুমারী দেহের অভ্যন্তরীণ পদ্ধতির সঙ্গে মিশে গিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও সক্রিয় করে তোলে এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে। শারীরিক মানসিক চাপ মোকাবিলার পাশাপাশি পরিবেশগত দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেহকে সুরক্ষা দিতে পারে ঘৃতকুমারী
৭। অ্যালক্যালাইন সমৃদ্ধ
সুস্বাস্থ্যের জন্য খাবার-দাবারে অ্যালক্যালাইন সমৃদ্ধ খাদ্য অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাদ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার কথা বলা হয়। ক্ষেত্রে ৮০/২০ বা ৮০ ভাগ অ্যালক্যালাইন সমৃদ্ধ খাবার ২০ ভাগ অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদেরা
ঘৃতকুমারী এমন খাবার যা অ্যালক্যালাইন তৈরি করে। কিন্তু আজকাল নগরজীবনে আমাদের খাদ্যাভ্যাস এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে প্রায়শই অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগতে হয়। ফলে অতিরিক্ত অ্যাসিডের ভোগান্তি থেকে বাঁচতে মাঝে মধ্যে ঘৃতকুমারী খান
৮। প্রদাহ ব্যথা কমায়
শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ দূর করতে খুবই কার্যকর ঘৃতকুমারী। এতে বি-সিসটারোল সহ এমন ১২টি উপাদান আছে যা প্রদাহ তৈরি হওয়া ঠেকায় এবং প্রদাহ হয়ে গেলে তা কমিয়ে আনে। ঘৃতকুমারীর এই সব গুণ হাত-পায়ের জোড়ার জড়তা দূর করে এবং গিঁটের ব্যথা কমাতেও সহায়তা করে
৯। হজমে সহায়ক
হজমের সমস্যা থেকেই শরীরে অনেক রোগ বাসা বাঁধে। তাই সুস্বাস্থ্যের অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে খাবার-দাবার পরিপাক বা হজমের প্রক্রিয়াটি ঠিকঠাক রাখা। পরিপাক যন্ত্রকে পরিষ্কার করে হজম শক্তি বাড়াতে ঘৃতকুমারী অত্যন্ত কার্যকর। ঘৃতকুমারীর রস পান করার দারুণ ব্যাপার হলো এটা কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়ারিয়া দুই ক্ষেত্রেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। পরিপাক রেচন যন্ত্রকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখে বলে ঘৃতকুমারীর রস পান করলে পেটে ক্রিমি হওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না, কিংবা ক্রিমি থাকলেও সেটা দূর হয়

0 comments:

Post a Comment

Healthymoy. Powered by Blogger.

''Good Health Good Life''


অতি প্রয়োজনীয়

Popular Posts

Blog Archive