চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখে যে খাবার গুলি, সেগুলি নিয়েই কথা বলবো আজকে। কেননা নারী কিংবা পুরুষ, উভয়েই চায় তাকে যেন সব সময় তরুণের মত দেখা যায়। চেহারা বুড়িয়ে যাওয়া যে কতটা বিরক্তিকর এবং লজ্জার তা যাদের চেহারা বুড়িয়ে গেছে, তারাই শুধু জানেন। আজকের আলোচনার সকল খাবারই বাংলাদেশে পাওয়া যায়, এবং বেশ সহজলভ্যও বটে। তাহলে আসুন জানি সেই সব খাবার সম্পর্কে, যা আপনার চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখবে।
কফি
প্রতিদিন সকালে এক কাপ কফি খাওয়া শুধু আপনার দিনকে চাঙ্গা শুরুই দিবে না, সাথে সাথে এর বায়োএক্টিভ কম্পাউন্ড গুলি আপনার ত্বককে মেলানোমা (আমেরিকার প্রথম পাঁচ ধরণের ক্যান্সারের একটি) থেকে সুরক্ষা দিবে। এমনটাই বলছে আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর একটি সামপ্রতিক জার্নাল। গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত কফি খান, তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং খুব কমই রোগাক্রান্ত হন। সাথে সাথে দেখা গিয়েছে যে যারা প্রতিদিন চার (৪) কাপ করে কফি খান, তাদের চেহারার মধ্যে তারুন্য বছরের পর বছর একই থাকে, এমনকি সেটা ১০ বছর পর্যন্তও একই থাকতে পারে। তাই, কফিকে হ্যাঁ বলুন, কিন্তু এতে অতিরিক্ত চিনি বা দুধ না দেওয়াই ভালো, আমরা ব্লাক কফি সম্পর্কে কথা বলছি।
তরমুজ
গরমের দিনে তরমুজ না হলে যেমন চলেই না; আর সেই তরমুজই আপনার ত্বককে রাখতে পারে সুন্দর, সতেজ এবং আপনাকে সাহায্য করতে পারে চেহারায় তারুন্য ধরে রাখতে। এর এন্টিঅক্সিডেন্ট কম্পাউন্ডই এর রং লাল করতে সাহায্য করে, যা আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট UV রশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। আর হ্যাঁ, এই কাজটি লাল টমেটোও করে, তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে টমেটো থেকে তরমুজের কার্যক্ষমতা প্রায় ৪০% বেশী। তাই, যত সময় হাতের কাছে তরমুজ আছে, তরমুজ ছাড়বেন না, নিয়মিত খেলে উপকার পাবেনই।
ডালিম / বেদানা / আনার
ডালিমের প্রতিটি দানা পরিপূর্ণ থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে, যা ভিটামিন সি এর মতই মুখের বলিরেখা, ভাঁজ এবং ত্বকের শুকিয়ে যাওয়া প্রাক্রিতিক ভাবেই প্রতিরোধ করে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন এ প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায় যে মধ্য বয়সী নারীদের মুখের ভাঁজ কমাতে এই ডালিমের রয়েছে এক অনন্য ক্ষমতা। তাছাড়া এর মধ্যে রয়েছে এমন গুন যা আপনার ত্বকের শুকিয়ে যাওয়া যেমন প্রতিরোধ করে, তেমনি করে শুকিয়ে যাওয়া ত্বককেও করে তোলে প্রানবন্ত। আর এর পাশাপাশি সুর্য্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকর দিক গুলি থেকেও ডালিম দিবে আপনাকে সুরক্ষা।
ডিম
আপনার হাত এবং পায়ের নখ গুলি প্রোটিন দ্বারা তৈরী; আর এই প্রোটিনের অভাবে হাত পায়ের নখ গুলি দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং সাথে সাথে ভেঙ্গে যেতে পারে। ডিম বায়োটিন এবং ভিটামিন বি কম্প্লেক্সে এর একটি ভালো উৎস। এছাড়া ডিম এ থাকে প্রচুর পরিমান খনিজ পদার্থ, যা আপনাকে রাখে সতেজ। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য খনিজ আয়রন খুবই প্রয়োজনীয় যা আপনি সহজেই ডিম থেকে পাবেন। আর সেজন্যই মাসিক এর সময় ডিম খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এতে করে আপনার দেহ থাকবে সতেজ, এবং আপনি দুর্বল অনুভব করবেন না। কিন্তু ডিম খাবার ক্ষেত্রে আমাদের ভাজি করে খাওয়া থেকে দূরে থাকাটাই ভালো, ভাজি করলে যেমন পুড়ে গিয়ে অনেক খাদ্যগুন নষ্ট হয়, তেমনি তেল দিয়ে ভাজি করা হয় বলে এতে ক্ষতির পরিমানটাও বেড়ে যায়। তাই সিদ্ধ করে খাওয়টাই ভালো।
আমরা দিনকে দিন স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক খাবারের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে চলে আসছি প্যাকেট জাত কৃত্রিম খাবারের দিকে। আর এটিই আমাদের দেহের হাজারোও সমস্যার মূল কারণ। আপনার সামনে যদি আপেল কিংবা পেয়ারে কেটে রাখা হয়, আর মিষ্টি রাখা হয়, সাধারণ ভাবেই বেশীরভাগ মানুষই ঐ মিষ্টি খাবে বেশী; কিন্তু হওয়া উচিৎ উল্টোটা। সাধারণত প্রাকৃতিক সকল খাবারই আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই প্রাকৃতিক ফলমূলের প্রতি আমাদের নির্ভরশীলতা আবার বাড়াতে হবে।
0 comments:
Post a Comment