Tuesday, May 30, 2017

চিকুন গুনিয়া একটি আফ্রিকান শব্দ যার অর্থ ধনুর মতো বাঁকা হয়ে যাওয়া বর্তমানে বাংলাদেশে চিকুন গুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি দেখা যাচ্ছে ১৯৫৫ সালে মেরিয়ন রবিনসন নামে একজন চিকিৎসক রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন১৯৫২ সালে আফ্রিকার মেকন্দ, মোজাম্বিক তানজেনিয়া এলাকায় রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে



চিকুন গুনিয়া একটি মেকন্দ শব্দ আফ্রিকায় রোগ আবিষ্কৃত হওয়ার পর দেখা গেল যে রোগের আবির্ভাব শুধু আফ্রিকায় নয় দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব পরিলক্ষিত হয় বর্তমানে ইউরোপ বিশেষ করে ইতালিতে রোগের বিস্তৃত পরিলক্ষিত হচ্ছে

চিকুন গুনিয়া এক ধরনের ভাইরাস সংক্রামিত রোগ এডিস মশা কামড়ের মাধ্যমে মানবদেহে রোগ ছড়িয়ে থাকে চিকুন গুনিয়া অসুখের জন্য যে ভাইরাস দায়ী তা এক ধরনের ভাইরাস যা টোগা ভাইরাস পরিবারের আলফা ভাইরাস সদস্য

ইহা মানবদেহ থেকে মশা এবং মশা থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে ওই ভাইরাস রক্তের লোহিত কনিকা যেমন ফাইব্রোবস্নাস্ট মেকরোফেজ নামক রক্তকনিকাকে আক্রান্ত করে থাকে আক্রান্ত হওয়ার ফলে এসব কোষ মৃত্যুবরণ করে থাকে রক্তের ইন্টারফেরন নামক এক ধরনের অ্যান্টিভাইরাস জাতীয় পদার্থ রোগের আক্রমণকে রহিত করতে পারে ভাইরাস ইনফেকশনের ফলে রক্তে ইন্টারফেকশন নামক পদার্থ তৈরি হয়



উপসর্গ :

প্রাথমিক অবস্থায় রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে, এটা মধ্যম মাত্রার জ্বর যা দুই থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে জ্বরের পরে রোগী শরীরের বিভিন্ন গিঁটে ব্যথায় আক্রান্ত হয় এবং সারা শরীরে রেশ (লাল দাগ ফোলা) দেখা দেয় এর সঙ্গে বমিভাব শরীর ব্যথা প্রচ- দুর্বলতা অনুভূত হয়

গিঁটের ব্যথা সাধারণত হাত এবং পায়ের গিঁটকে আক্রান্ত করে থাকে ধরনের গিঁটের ব্যথা সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যথা কয়েক বছর ধরে থাকতে পারে সাধারণভাবে মশার কামরে দুই থেকে পাঁচদিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে

রোগ শনাক্তকরণ :

রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্তকরণ এবং রক্তের অন্যান্য কিছু পরিবর্তন শনাক্তকরণের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে যেমন ঈইঈ, চঈজ, খমএ, খমগ এবং ঊখওঝঅ পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা হয়ে থাকে

চিকিৎসা :

. জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ বেশ কার্যকর
. গিঁটে ব্যথার জন্য সচরাচর ব্যবহৃত ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ কার্যকর নয় ব্যথা নিরাময়ের জন্য ক্লোরোকুইন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যেতে পারে . জ্বরের সময় রোগীকে প্রচুর পানি তরল জাতীয় খাবার দেয়া যেতে পারে
. অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের ভূমিকা খুবই নগণ্য তবে জটিলতা প্রতিরোধের জন্য ক্ষেত্র বিশেষে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে


প্রতিরোধ :

যেহেতু চিকুন গুনিয়া মশাবাহিত রোগ তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মশারি ব্যবহার, মশা নিরোধক স্প্রে, কয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে

রোগ প্রতিরোধের জন্য ইন্টারফেরনযুক্ত সিরাম ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যায় উন্নত বিশ্বে চিকুন গুনিয়া প্রতিরোধের জন্য বানরের সিরাম ব্যবহার করা হয় ডিএনএ ভ্যাকসিন আবিষ্কার এখনো পরীক্ষাগার পর্যায়ে আছে আশা করা যাচ্ছে অতিসত্বর চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের জন্য ধরনের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে

পরিণাম :


বয়সের সঙ্গে রোগের পরিমাণ নির্ভরশীল সাধারণভাবে অল্প বয়স্ক রোগীরা - সপ্তাহের মধ্যে সুস্থতা লাভ করে কিন্তু মধ্যম বয়সের রোগীরা সুস্থ হওয়ার জন্য - মাস লেগে যেতে পারে তবে বয়স্ক ব্যক্তিরা অনেক দীর্ঘ সময় ধরে রোগে ভুগতে পারেন গর্ভবতী মহিলাদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে গর্ভের বাচ্চার কোনো ধরনের অসুবিধা পরিলক্ষিত হয় না কোনো কোনো রোগীদের পা ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয় যার কারণ নির্ণয় করা এখনো সম্ভব হয়নি

সুত্রঃ অনলাইন

0 comments:

Post a Comment

Healthymoy. Powered by Blogger.

''Good Health Good Life''


অতি প্রয়োজনীয়

Popular Posts